গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
চাল-ডাল-তেল-সবজিসহ নিত্যপন্যের দাম কমিয়ে শ্রমজীবি-নিম্নআয়ের মানুষদের জন্য আর্মিরেটে রেশন সরবরাহের দাবীতে শনিবার বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে পৌর শহীদ মিনার চত্বরে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের জেলা সমন্বয়ক অ্যাড. নওশাদুজ্জামান নওশাদের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সংগ্রামী সমন্বয়ক কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সদস্য মনজুর আলম মিঠু, আমিনুল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সমন্বয়ক আশরাফুল ইসলাম আকাশ, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের জেলা সংগঠক প্রভাষক জাহিদুল হক প্রমুখ। সভা শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ছাত্র-জনতার বীরত্বপূর্ণ লড়াই-সংগ্রাম, প্রায় এক হাজার মানুষের শহীদি আত্মদান এবং প্রায় ৩০ হাজার মানুষের পঙগুত্ব বরণের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগষ্ট ফ্যাসিবাদী হাসিনার সরকার উৎখাত হয়েছে। কিন’ এখনো আন্দোলনে আহতরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেনা, ফ্যসিষ্টদের সবাই গ্রেফতার হয়নি। সরকার উৎখাত হলেও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থা এখনো বহাল রয়েছে। ফলে ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেট ভাংগেনি, নিত্যপণ্যের দাম কমেনি, গার্মেন্টস শ্রমিকসহ কোন শ্রমিকই ন্যায্য পাওনা পাচ্ছেনা, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের কোন উদ্যোগ নেই, পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, সরকারি-বেরসরকারী অফিসে ঘুষ-দুর্নীতি চলছেই, হাট-ঘাটের ইজারাদারী জুলুম-নির্যাতন যেমন ছিলো তেমনি আছে, ক্ষেতমজুরদের কাজ নেই, কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম পায়না।
২৪ এর গনঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা বাস্তবায়ন করতে হলে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিৎসাসহ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুম-খুন, লুটপাটকারী ফ্যাসিষ্ট হাসিনাসহ তার সকল সহযোগীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টানত্মমূলক বিচার করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন, ভাস্কর্য ভাংগাসহ
সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, নির্যাতন ও লুটপাটকারীদের খুজে বের করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি এবং রাজনীতিতে ধর্মের ব্যাবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। নেতৃবৃন্দ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন ও রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বিধান বাতিল, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের জামানত ৫হাজার টাকা নির্ধারণ করাসহ দ্রুততম সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আযোজনের দাবী করেন। সকল বেকারদের চাকুরী, চাকুরী না হওয়া পর্যন- মাসে ১০হাজার টাকা ভাতা প্রদান এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করার দাবী জানান। সকল বন্ধ পাটকল ও চিনিকল চালু করাসহ গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য দাবী মেনে নিয়ে অবিলম্বে হামলা-গ্রেফাতার ও গুলি করে শ্রমিক হত্যা বন্ধ করার আহবান জানান। তারা কৃষি ফসলের ন্যায্যমুল্য নিশ্চিত, ক্ষেতমজুরদের সারাবছর কাজ, সকল বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধীদের মাসিক ১০ হাজার টাকা ভাতা প্রদানের জোর দাবী জানান।