জবি প্রতিনিধি:
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশে ভারতীয় হেজিমনি প্রতিষ্ঠা করতে সর্বপ্রথম তারা সংস্কৃতিক আক্রমণ চালিয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরের পর থেকেই অর্থ্যাৎ স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক আক্রমণ চালিয়েছে ভারত।
রোববার (১৭ নভেম্বর) জাস্টিস ফর জুলাই, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে ভুটানের একটা ফ্রেন্ডশিপ চুক্তি আছে যার মাধ্যমে তারা ভুটানের সঙ্গে হেজিমনিক সম্পর্ক তৈরি করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে তারা ফ্রেন্ডশিপ চুক্তি না করলেও একটা উপনিবেশে পরিণত করেছিল। বর্তমানে আমাদের সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ভারতীয় হেজিমনি পরাজিত করার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে বাঙালি মুসলমানের রেঁনেসার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। রেঁনেসা হতে গেলে, আমাদের সবকিছুতে পারদর্শী হতে হবে। জুলাই বিপ্লব সফল করতে হলে, বাঙালি মুসলমান আইডেনটিটিকে ধারণ করতে হবে। বাঙালি মুসলমানের আলাদা কালচার, ঐতিহ্য আছে। সরকার দ্রুত দেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে এ প্রত্যাশা করে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা নিয়ে নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের লড়াই চলমান রাখতে হবে। দৈনিক আমার দেশ বাঙালি মুসলমানের আইডেনটিটি তুলে ধরার একটা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় সত্য লিখার জন্য আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, স্বাধীনতার পর পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র সাহায্যের আড়ালে আমাদের প্রভু সাজার মানসিকতা ও আধিপত্যবাদ বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে আমাদের কাছে এসেছে। চব্বিশের ছাত্রজনতা অভ্যুত্থানে আজ অনেককেই মাস্টারমাইন্ড হতে দেখি। চব্বিশের প্রেক্ষাপট কারা তৈরি করেছে? একসময় দেখতাম সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে গেছে, একমাত্র মাহমুদুর রহমান ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। এই অভ্যুত্থানের অন্যতন কারিগর মাহমুদুর রহমান।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান চেয়ারম্যান মো. মেসবাহ-উল-আজম সওদাগর বলেন, শাহবাগের দুইটা ডাইমেনশন আছে এর মাধ্যমে আইনের শাসনকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বিচারের নামে অবিচারের সংস্কৃতি শাহবাগের মাধ্যমে হয়েছে। বাঙালি মুসলমানের মধ্যে হিন্দুত্ববাদ ঢুকে দেওয়ার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় শাহবাগে।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নুরুল্লাহ বলেন, ২০০৬ এ ক্ষমতায় আসার জন্য একটি দল অরাজকতা তৈরি করে ক্ষমতায়া আসার জন্য। ওই দল ভারত থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে আসত। তাদের কুচিন্তা বাস্তবায়ন করতে তৈরি হয় শাহবাগ।
শাহবাগ ও ফ্যাসিবাদ এবং নয়া বাংলাদেশের গতিপথ শীর্ষক আলোচনা সভায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মেজবাহ-উল-আজম সওদাগর, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দিন আহমদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক। এসময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও জাস্টিস ফর জুলাই, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যরাসহ বিশ্ববিদ্যালেয়র সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।