
মোঃমোমিনুল ইসলাম
স্টাফ রিপোর্টার (দিনাজপুর)

দিনাজপুরের পুলহাট থেকে খানপুর পর্যন্ত সড়কের দুই ধারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আজ (রবিবার) সকাল থেকে জেলা প্রশাসন ও সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এই অভিযান শুরু হয়।
(২ নভেম্বর) সকাল ১১টায় ডেপুটি সেক্রেটারি মো. আশরাফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়। এ সময় সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের ১২০ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য এই উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। শহরের অন্তত সাতটি বাজারের অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। যদিও পূর্বে বহুবার চেষ্টা করা হয়েছে, এবার কঠোর হাতে এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এর ফলে বিপুল পরিমাণ জমি উদ্ধার হবে এবং ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
দিনাজপুর কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, এতে কিছু স্থায়ী দোকান ও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক ব্যবসায়ী পুঁজি হারাচ্ছেন, তাদের পুনর্বাসনের দাবি রয়েছে।
উচ্ছেদ অভিযান আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন দিনাজপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সড়কের দুই পাশের সরকারি জায়গা দখল করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে দোকানপাট, ঘরবাড়ি এবং অন্যান্য কাঠামো নির্মাণ করে আসছিল। এর ফলে সড়কটি সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় যানজট ও জনদুর্ভোগ তীব্র আকার ধারণ করে।
অভিযানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও আনসার সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এসময় ভারী যন্ত্রপাতি (এক্সকাভেটর) ব্যবহার করে সড়কের দুই ধারের সমস্ত অবৈধ ও অস্থায়ী স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
অভিযান পরিচালনাকারী ডেপুটি সেক্রেটারি মো. আশরাফুল হক চৌধুরীর জানান, সড়কের জায়গা দখলমুক্ত করতে এবং জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই উচ্ছেদ কার্যক্রম শান্তিপূর্ণভাবে চলছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সড়কের দুই পাশ সম্পূর্ণ দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ। তারা আশা করছেন, এর ফলে এই এলাকার যানজট নিরসন হবে এবং সড়কের শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
দিনাজপুর সড়ক বিভাগ জরিপ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, শিল্প ও অগণিত ছোট ছোট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়ি উচ্ছেদে লাল দাগ দিয়ে চিহ্নিত করেছেন।
তবে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, সড়ক বিভাগ কোনো জরিপের আওতায় (সিএস, এসএ) কোন দাগে, কত পরিমাণ জমি উচ্ছেদ করবেন- তার কোনো পরিসংখ্যান আমাদের জানায়নি। ১৯৪২ সালে গেজেট হওয়ায় গত ৮৩ বছরের মধ্যে অধিগ্রহণ করা জমি সড়ক বিভাগের রেকর্ডভুক্ত ও নথিভুক্ত করার কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে ৮৩ বছর ধরে ওইসব জমি কেনা-বেচা হয়েছে। সরকারের রেজিস্ট্রার কর্তৃক দলিলাদি সম্পন্ন এবং নাম খারিজসহ খাজনা পরিশোধ হয়েছে এবং চলমান রয়েছে। এই খাতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করেছে। গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে আইনি বৈধতা না থাকা সত্ত্বেও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে।
তবে একটি সুত্র জানায়, সড়ক বিভাগের জায়গায় ১২০ ফুট পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার কথা থাকলে ও উচ্ছেদ করা হচ্ছে ৮৫ ফুট। এর কারণ জানা যায়নি।


















