মিঠাপুকুর প্রতিনিধি
রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলা বিগত ১৫ বছর ধরে সদ্য সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে নানাবিধ আয়োজন করলেও ভিন্নরুপ ধারণ করছে বর্তমানে। গত ৩৬ শে জুলাই (৫ আগষ্ট) ছাত্র-জনতার কোটা আন্দোলনের কারনে সরকার পতনের পর ১৫ই আগষ্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কোন কার্যক্রম দেখা মেলেনি আওয়ামীলেক পন্থী নেতাকর্মী ও অঙ্গসংগঠনের তৃণমূল নেতাদের। বিগত ১৫ বছরে দখলে থাকা শুন্য মাঠে অবস্থান করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল(বিএনপি) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বিগত সময়ে দেখা গিয়েছে সদ্য বাতিলকৃত শোক দিবসে মিঠাপুকুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নানাবিদ আয়োজন নিয়ে দেখা গেলেও আজ (১৫ই আগষ্ট) মিঠাপুকুরে আওয়ামীলীগের কোন নেতাকর্মীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি ও ১৫ই আগস্ট ঘিরে কোন কার্যক্রমও চোখে পড়েনি ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়-উপজেলা পরিষদ মাঠ, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ফ্লাইওভারের নিচ সহ উপজেলার প্রত্যেকটি স্থানেই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের সারাদিন ব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
মিঠাপুকুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও বিএনপির প্রবীণ নেতাকর্মীদের সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ও গণহত্যাকারী খুনি শেখ হাসিনা সহ তার দোসরদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করতে দেখা যায়। অপরদিকে মিঠাপুকুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে । ১৫ই আগষ্ট সকাল থেকে মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে উপজেলার সকল ছাত্র-শিবির ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে ।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন-তারা খুনি হাসিনার বিচারের দাবিতে সারাদিনব্যাপি বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবেদন করে বলেন- অতিদ্রুত খুনি হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
উপজেলা জামায়াতের আমীর জয়নাল আবেদিন মাস্টার জানান,তারা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন যাতে করে কেউ মিঠাপুকুরে অরাজকতার সৃষ্টি করতে না পারে । কেউ যদি মিঠাপুকুরের মাটিকে পূণরায় কলঙ্কিত করতে চায় তাহলে তারা শক্ত হাতে তার প্রতিহত করবেন ।
শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী পালন সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহব্বায়ক আফসার আলীর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ক্ষমতাসীন থাকাকালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির নানাবিধ প্রোগাম তিনটি গ্রুপে অনুষ্ঠিত হতো।এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সংঘাত সৃষ্টি হয়েছিল।
সারাদিনব্যাপী বিএনপি ও জামায়াতের এই কর্মসূচিতে লক্ষ্য করা যায় বিএনপির মধ্যেও দুইটি গ্রুপ। বর্তমান উপজেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক গোলাম রব্বানী ও মোতারুল ইসলাম নিক্সন পাইকারের নেতৃত্বে মিঠাপুকুর ওভারব্রীজের নিচে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।অপরদিকে উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সাজেদুর রহমান রানা ও একেএম রুহুলউল্লাহ জুয়েলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল উপজেলার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন শেষে ওভারব্রীজের নিচে অবস্থান নেয়। পরিবর্তীতে মিঠাপুকুর প্রাণী সম্পদ অফিসের পিছনে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করেন।