স্টাফ রিপোর্টার:
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়ন দক্ষিণ সন্তলা গ্রামের সামিউল ইসলাম এর পুত্র মো:তাহসিন ইবনে সাকিব (২২) এর সাথে বিরাহিমপুর গ্রামের মো: ইসমাইলের কন্যা মোছা:ইয়াছমিন (১৭) একে অপরে ২০২৩ সালের শুরুর দিক প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। তারা দুজনেই ভাতগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছেলের পিতা পেশায় একজন ভাতগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজের কেরানি এবং মেয়ের পিতা কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
জানা যায়,২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের দিকে সাকিব ইয়াসমিনকে প্রেমে প্রস্তাব দেয়। এই প্রস্তাবে ইয়াসমিন রাজি হয় না । পরবর্তীতে ইয়াসমিন ও সাকিব প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই ভাবেই কয়েক মাস অতিবাহিত হয়। সাকিব ইয়াসমিনকে বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখায় এবং বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপারে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। এর একপর্যায়ে ১৬ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে সাকিব তার পরিচিত একটা বাড়িতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইয়াসমিনকে নিয়ে যায়। কিন্তু সে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখে বিয়ের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেই। তখন ইয়াসমিন উক্ত বাসা থেকে চলে আসতে চাইলে সাকিব তাকে বিভিন্ন ভাবে আশ্বস্ত করে এবং একপর্যায়ে বলপূর্বক তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে । পরবর্তীতে সাকিব পরিপূর্ণ ভাবে গাঢাকা দিয়ে থাকে। ইয়াসমিন শত চেষ্টার পরেও তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি। এই অবস্থাতে ইয়াসমিন সাকিবের সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় এবং খুঁজে না পাওয়ায় বিষয়টি অভিভাবককে জানালে, অভিভাবক এবং প্রতিবেশীরা মিলে গ্রামের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে জানিয়ে বিচার প্রার্থনা করে। তখন সাকিবের পরিবার অন্যায় প্রভাব খাটিয়ে এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়। এতে করে ইয়াসমিন ও তার পরিবার সামাজিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গত ২১/০৮/২৪ তারিখে কলেজ ছুটি হলে ইয়াসমিন পায়ে হেটে বাড়ি আসার সময় ভাতগ্রামস্থ অনাথ একাডেমি সংলগ্ন গাব গাছের নিচে সাকিব ও তার বকাটে সহপাঠী সহ ইয়াসমিনের পথ অবরুদ্ধ করে দাড়ায়। এ সময় ইসয়াসমিনকে বিভিন্ন ভাবে ভয় ভিতি দেখিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা যোগে ভাতগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে নিয়ে যায়। তাকে ভয়ভিতি দেখায় ইয়াসমিনকে মারধর করে এবং পেটে চাকু ধরে হত্যা করার হুমকি দেয় । অতপর উক্ত বিদ্যালয়ের দপ্তরির নিকট একটি রুমের চাবি চায় তিনি চাবি না দিয়ে অধ্যক্ষ কে ফোন দেয়। এর পর অধ্যক্ষ কয়েকজন শিক্ষক সহ এসে ইয়াসমিনকে উদ্ধার করে বাড়িতে প্রেরণ করে।
অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ খাদেমুল ইসলাম মুঠো ফোনে ফার্স্ট বাংলা নিউজকে বলেন, দপ্তরি আমাকে ফোন করে বলে, সাকিব একটা কক্ষ খুলে চায় তখন আমি দিতে নিষেধ করি। সাথে সাথে আমি কয়েকজন শিক্ষক সহ কলেজে যাই। আমাকে দেখে সাকিব ও তার সহপাঠি পালিয়ে যায়। আমি ইয়াসমিন বুঝিয়ে বাড়ি পৌছে দিয়ে আসি। ইয়াসমিনের পরিবার আমাকে কোন লিখিত অভিযোগ করেনি।
অদ্য তারিখেই সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর ইয়াসমিনের পিতা অভিযোগ দায়ের করেন। এবিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.কাওছার হাবীব বলেন আমি অভিযোগ পেয়ে তা যথাযথ তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট প্রেরণ করেছি।
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.শফিকুল ইসলাম বলেন একটি অভিযোগ পেয়েছি তা এখনো নথিভুক্ত করা হয়নি। আমরা উভয় পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এটি সমাধানের চেষ্টা করতেছি। সমাধান নাহলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ইয়াসমিন ফার্স্ট বাংলা নিউজকে বলেন,সাকিব আমার সর্বনাশ করেছে। আমি সমাজে মুখ দেখাতে পারছি না। সাকিব যদি আমাকে বিয়ে না করে তবে আমি আত্মহত্যা করব।।