
গাইবান্ধা-৩ আসনে আলোচনায় অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিক
আশিক শাওন :

গাইবান্ধার রাজনীতিতে যারা সৎ, ত্যাগী ও কর্মীবান্ধব নেতৃত্বের কথা বলেন, তাদের তালিকার শীর্ষেই উঠে আসে জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিকের নাম। প্রায় তিন দশকের রাজনৈতিক জীবনে বারবার জেল, জুলুম, হামলা-মামলার মুখোমুখি হয়েও জাতীয়তাবাদী আদর্শ থেকে একচুলও সরে যাননি তিনি। তৃণমূল নেতাকর্মীর আস্থা আর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস—দুটোই সমানভাবে অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইতিমধ্যেই গাইবান্ধা-৩ আসন (পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর) ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। তফশিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে ভোটারদের মাঝেও। এ অবস্থায় ডা. সাদিক বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে মাঠে নেমেছেন। তার প্রতিশ্রুতি—প্রিয় এলাকা পলাশবাড়ী ও সাদুল্লাপুরকে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ মুক্ত করে একটি আধুনিক ও নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা।
দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম ও জনসেবার দৃষ্টান্ত
ডা. সাদিক শুধু রাজনীতিতেই নয়, একজন চিকিৎসক ও অধ্যাপক হিসেবেও পরিচিত মুখ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। করোনাকালে যখন মানুষ ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছিল, তখন তিনি নিজের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে স্থানীয়দের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। অসহায়দের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যার সময় ত্রাণ সহায়তা ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে আর্থিক সহযোগিতা—এসব কাজ তাকে জনগণের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। তরুণদের খেলাধুলা ও সংস্কৃতিমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে নিয়মিত পৃষ্ঠপোষকতাও করেছেন তিনি।
নেতাকর্মীদের পাশে সবসময়
নিজ দলের নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে তিনি ছিলেন আস্থার ঠিকানা। রাজনৈতিক মামলায় নেতাকর্মীদের জামিন করানো থেকে শুরু করে তাদের পরিবারকে সহায়তা করা—সবকিছুতেই তিনি ছিলেন সক্রিয়। তার ভাষায়, “আমার নেতাকর্মীরা জেল খেটেছে, আমি তাদের জামিন করিয়েছি। তাদের পরিবারের পাশে থেকেছি।”
ব্যক্তিগত ক্ষয়ক্ষতির মাঝেও সংগ্রাম
রাজনীতির কারণে ডা. সাদিককে ব্যক্তিগতভাবে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। বিএনপি অফিস হিসেবে ব্যবহার করার কারণে তার দুটি বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়—২০২০ সালে পলাশবাড়ীর বাসা এবং ২০২৪ সালে সাদুল্লাপুরের বাসা। এছাড়া বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে সাতটি মামলা হয়েছে এবং তিনি কারাবন্দিও হয়েছেন। তবুও তিনি রাজপথ ছেড়ে দেননি, বরং আরও দৃঢ়ভাবে আন্দোলনে সক্রিয় থেকেছেন।
মনোনয়ন নিয়ে আশাবাদ
মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন—“গাইবান্ধা-৩ আসনে বিএনপির বিজয় সুনিশ্চিত। এই নির্বাচন হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের লড়াই, আর সেই প্রতিরোধ হবে ব্যালটের মাধ্যমে। তরুণ ভোটাররা এবার সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করবে। আমি বিশ্বাস করি ধানের শীষ আমার কাছেই নিরাপদ।”
তিনি আরও বলেন—“শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছি। দীর্ঘ সংগ্রামের পথে আমার পরিবার ও আমি অনেক ত্যাগ করেছি। আমার নেতাকর্মীরা জানে আমি সবসময় তাদের পাশে থেকেছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। দলের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।”
ভোটার সংখ্যা ও প্রেক্ষাপট
১৯৮৪ সালে পলাশবাড়ী ও সাদুল্লাপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত হয় গাইবান্ধা-৩ আসন। এ আসনে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৫ হাজার ৮৯৬ জন। স্থানীয়দের মতে, অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিকের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম, সামাজিক কর্মকাণ্ড এবং জনবান্ধব নেতৃত্ব তাকে আসন্ন নির্বাচনে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাবে।