
মোঃমোমিনুল ইসলাম
স্টাফ রিপোর্টার (দিনাজপুর)

জাতীয় নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পি.আর) পদ্ধতির বাস্তবায়ন এবং জুলাই সনদের আইনী ভিত্তিসহ কেন্দ্র ঘোষিত ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দিনাজপুর শাখা জেলা প্রশাসক বরাবর এক স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে জামায়াতে ইসলামীর দিনাজপুর জেলা নেতৃবৃন্দ একটি প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এই স্মারকলিপি জমা দেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখিত প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে।
বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামী দিনাজপুর জেলা শাখার উদ্যোগেহ একটি মিছিল বের করা হয় ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ থেকে । কয়েকহাজার নেতাকর্মী মিছিলসহকারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম এরকাছে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর লেখা স্মারকলিপি প্রদান করেন।
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পি.আর) পদ্ধতির প্রবর্তন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি দলের প্রাপ্ত ভোটের হারের ওপর ভিত্তি করে আসন বণ্টনের জন্য পি.আর পদ্ধতি চালুর দাবি জানানো হয়। জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই পদ্ধতি চালু হলে নির্বাচনে সকল দলের প্রকৃত জনপ্রিয়তার প্রতিফলন ঘটবে এবং প্রতিটি ভোটের মূল্যায়ন হবে।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন,দিনাজপুর জেলা আমীর অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান,শহর আমীর সিরাজুস সালেহিন, শহর সেক্রেটারী কামরুল হাসান রাসেল,দিনাপুর সদর তিন আসনের এমপি প্রাথী মাইনুল আলম ইসলাম চেয়ারম্যান প্রাথী মজিবর রহমান খানসামা ও চিরিবন্দ আসনের প্রাথী আবতাব উদ্দিন মোল্লা সহ জেলা জামায়ত ও শহর জামায়াতের ১৩ উপজেলার নেতৃবৃন্দ।
জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি প্রদান একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথরেখা হিসেবে আলোচিত ‘জুলাই সনদ’-এর আইনগত ভিত্তি প্রদানের দাবি করা হয়েছে।
অন্যান্য দাবি এছাড়াও কেন্দ্র ঘোষিত আরও তিনটি দাবি স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, যা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি এবং গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য বলে জামায়াত মনে করে।
স্মারকলিপি প্রদানকালে জামায়াতের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য তাদের উত্থাপিত ৫ দফা দাবি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা আশা করেন, সরকার এই দাবিগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
দিনাজপুর জেলা শহর আমীর বলেন,আপনি অবগত আছেন যে, বর্তমান ‘একতরফা’ নির্বাচনী ব্যবস্থার কারণে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বারবার ব্যাহত হচ্ছে। জনগণের প্রকৃত রায়ের প্রতিফলন ঘটছে না, যার ফলে সংসদ পরিণত হয়েছে একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পি.আর (Proportional Representation) পদ্ধতি প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছি। এই ব্যবস্থা চালু হলে প্রত্যেকটি দল তাদের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে। এতে রাজনৈতিক হানাহানি, প্রতিহিংসা এবং ‘একক বিজয়ী’র আধিপত্য কমবে এবং দেশে একটি সুস্থ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটবে।
তার আর বলেন, ‘জুলাই সনদ’-এর আইনী ভিত্তি প্রদান। জাতির চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে একটি জাতীয় ঐকমত্যের রূপরেখা হিসেবে এই সনদ ঘোষিত হয়েছে। আমরা মনে করি, এই সনদের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ জাতীয় সরকার গঠন করা হলে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে এবং দেশ একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক পথে অগ্রসর হতে পারবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বেশ কিছুদিন যাবত দেশব্যাপী তাদের এই ৫ দফা দাবির পক্ষে জনমত গঠন ও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় দিনাজপুরেও এই স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালিত হলো।


















